কৃষকদের ওপর লাঠিচার্জ , গুরুতর আহত অনেক মহিলা : স্বরাজ ইন্ডিয়ার প্রতিবাদ
সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার প্রেস বিজ্ঞপ্তি
৬ জুলাই ২০২২
এসকেএম পশ্চিমবঙ্গের ফারাক্কায় আদানি গ্রুপের উচ্চ ভোল্টেজ যুক্ত বিদ্যুতের লাইন জোর করে বসানোর ঘটনায় কৃষকদের উপর পুলিশি-বর্বরতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে; অবিলম্বে কাজ বন্ধ, অত্যাচার বন্ধ, গ্রেফতার কৃষকদের মুক্তি ও মুখোমুখি আলোচনার দাবি জানাচ্ছে
সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নজরে এসেছে যে আদানি গ্রুপের গ্রিড পাওয়ার-লাইনের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কা এলাকায় বাগান চাষি সহ অন্যান্য চাষিদের কাছ থেকে গায়ের জোর করে জমি ও বিদ্যুৎের তার যাবার পথ কেড়ে নিচ্ছে। কৃষক আন্দোলনের সমর্থক বলে প্রকাশ্যে দাবি করা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কৃষকদের ওপর নৃশংস লাঠিচার্জ ও ভয় দেখিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করা কৃষক বিরোধী ভূমিকায় এসকেএম হতাশা প্রকাশ করছে। পুলিশি অত্যাচারে অনেক কৃষক গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানা গেছে যাদের মধ্যে অনেক মহিলাও রয়েছেন। শারীরিকভাবে নিগ্রহ করার পাশাপাশি ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের’ নির্দেশে নিগৃহীত কৃষকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে জেলে পাঠানো হয়েছে এবং হেফাজতে নির্যাতন করা হচ্ছে। এসকেএম মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-কে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে এই আদানি গোষ্ঠীর মতো কর্পোরেটরাই সম্ভবত কৃষক বিরোধী কালো আইনগুলির ‘অনুপ্রেরণা’, যে আইনগুলো কেন্দ্রের মোদী সরকার জোর করে কৃষকদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। ৩৮০ দিনের দৃঢ় প্রতিরোধ ও ৭০০-রও বেশি কৃষকের আত্মবলিদানের বিনিময়ে জয়ী দিল্লির ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলন এই কর্পোরেট-রাজনৈতিক জোটের বিরুদ্ধেই ছিল।
কৃষকদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে, তাদের মতামত ও অনুমতি ছাড়াই পাকা ফল থাকা গাছ কাটার জন্য প্রশাসন, পুলিশ বাহিনী এবং স্থানীয় শাসকদলের রাজনৈতিক কর্মীরা এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে; গ্রামের পুরুষদের পালাতে বাধ্য করা হয়েছে। এই সুযোগে আদানি গ্রুপের দালালরা চাষিদের আম ও লিচু গাছ কেটে নিঃশেষ করছে। এসকেএম-এর অন্তর্ভুক্ত একটা সংগঠনের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম ৩রা জুলাই বিক্ষোভকারী কৃষকদের সঙ্গে কথা বলতে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলিতে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল কিন্তু পুলিশ তাদের শারীরিকভাবে বাধা দেয়; কার্যত তাদের হোটেলেই আটক করে রাখা হয়, বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। অনেক পরে, দায়সারাভাবে এবং পুলিশি ঘেরাটোপে এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয় কিন্তু দলটিকে ভুক্তভোগী গ্রামগুলির বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা করতে এবং প্রতিবাদী কৃষকদের সঙ্গে কথা বলতে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এই ভুমিকা অত্যন্ত বেআইনি, অগণতান্ত্রিক এবং অগ্রহণযোগ্য। কৃষকদের সঙ্গে দেখা করার এবং তাদের ন্যায্য লড়াইয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার এসকেএম-এর আছে। যে সরকার এসকেএম-কে কৃষকদের সঙ্গে থাকতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে সেই সরকার কৃষক বিরোধী।
কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে নিন্মলিখিত নির্দেশগুলো দেওয়ার জন্য এসকেএম পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছে:
১) যেসব এলাকায় কৃষকরা অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন সেখানে আদানি গ্রুপের গ্রিড পাওয়ার-লাইনের কাজ বন্ধ করতে হবে
২) অনিচ্ছুক কৃষকদের সঙ্গে ভয়-মুক্ত, অনুকূল পরিবেশে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজার চেষ্টা করতে হবে
৩) কৃষকেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে পুলিশ বা জেল হেফাজত থেকে তাদের মুক্তি দিতে হবে
৪) এসকেএম শীঘ্রই জাতীয় স্তরের একটা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম অকুস্থলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেই দলের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে
সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা
ই-মেল: samyuktkisanmorcha@gmail.com
জারি করেছেন-
ডাঃ. দর্শন পাল, হান্নান মোল্লা, জোগিন্দর সিং উগ্রাহান, যুধবীর সিং, যোগেন্দ্র যাদব